ছয় মাস আগে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে ভারতের বেঙ্গালুরুর এক ডাক্তারকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিজের চিকিৎসা জ্ঞান ব্যবহার করে মাত্রাতিরিক্ত অ্যানেস্থেটিক ওষুধ দিয়ে স্ত্রীকে খুন করে ঘটনাটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে চালানোর চেষ্টা করেছিলেন।
অভিযুক্ত ডা. মহেন্দ্র রেড্ডি (সার্জন) এবং ডা. কৃতিকা রেড্ডি (চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ) গত বছরের ২৬ মে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং দুজনই বেঙ্গালুরুর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কৃতিকা অসুস্থ হয়ে পড়লে অভিযুক্ত মহেন্দ্র তাকে হাসপাতালে না নিয়ে ঘরেই অ্যানেস্থেটিক ওষুধ প্রোপোফল দেন, যার মাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। এরপর কৃতিকা আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত নিকটস্থ একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা কৃতিকাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রাথমিকভাবে বিষয়টি স্বাভাবিক মনে হলেও, সম্প্রতি তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এবং ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (এফএসএল)-এর প্রতিবেদনে কৃতিকার দেহে প্রোপোফলের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়। এতে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর চেয়ে হত্যার আশঙ্কা স্পষ্ট হয়।
এই ঘটনার তদন্ত করার সময় পুলিশ অভিযুক্ত সার্জন মহেন্দ্র রেড্ডির ফোন ফরেনসিক বিশ্লেষণের জন্য পরীক্ষা করে। সেখানে একটি ডিজিটাল পেমেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে এক নারীকে পাঠানো একটি বার্তা খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে লেখা ছিল, ‘তোমার জন্যই আমি আমার স্ত্রীকে খুন করেছি’।
পুলিশ জানায়, মহেন্দ্র রেড্ডি জেনারেল সার্জন হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন এবং এক নারীর সঙ্গে এই অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতেন। পুলিশ ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার বক্তব্য রেকর্ড করেছে।
এফএসএল-এর প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর কৃতিকার বাবা মহেন্দ্রর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ মহেন্দ্রর বাসা থেকে ক্যানোলা সেট, ইনজেকশন টিউবসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম উদ্ধার করে।
বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার সীমান্ত কুমার সিং বলেন, এ পর্যন্ত সংগৃহীত প্রমাণগুলো স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে যে অপরাধে স্বামীর ভূমিকা ছিল। তিনি দাবি করেছিলেন, কৃতিকা অসুস্থ ছিলেন, কিন্তু এখন আমরা জেনেছি, তাকে সিডেটিভ ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল, যা থেকে হত্যার উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়।
অবশেষে ১৫ অক্টোবর মহেন্দ্র রেড্ডিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
খবরঃ-এনডিটিভি